1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

পশ্চিমবাংলায় পঞ্চম দফার ভোটে বিক্ষিপ্ত হিংসা, মোটামুটি নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন

  • Update Time : শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ২০৬ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা : বিক্ষিপ্ত ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটলেও পশ্চিমবাংলার পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ মোটামুটি নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ–প্রশাসন সতর্ক থাকায় কিছু জায়গায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা কড়া ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত হিংসার ঘটনাগুলিতে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, নির্বাচন ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। এদিন ৬টি জেলার ৪৫টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ভোটদানের হার ছিল ৭৮.৩৬ শতাংশ।

এই ৭৮.৩৬ শতাংশের মধ্যে কালিম্পঙে ভোট পড়েছে ৬৯.৫৬ শতাংশ, দার্জিলিঙে ৭৪.৬০ শতাংশ, এ ছাড়া জলপাইগুড়িতে ৮১.৭৩ শতাংশ, উত্তর ২৪ পরগনাতে ৭৫.১৪ শতাংশ, নদিয়াতে ৮১.৫৭ শতাংশ এবং পূর্ব বর্ধমানে ভোট পড়েছে ৮১.৭২ শতাংশ। এদিন যে ৪৫টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়, সেগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার ১৬টি আসন, নদিয়ার ৮টি আসন, পূর্ব বর্ধমানের ৮টি আসন, দার্জিলিংয়ে ৩টি আসন, কালিম্পংয়ের ১টি আসন এবং জলপাইগুড়ির সব কটি আসন রয়েছে। পঞ্চম দফায় কোচবিহারের শীতলকুচিতে যে হিংসার ঘটনা ঘটে, তার পরই নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যথেষ্ট সতর্ক ছিল। তবে এদিনও দেগঙ্গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে।
তৃণমূলের অভিযোগ, শনিবার ভোটগ্রহণ পর্বের মধ্যেই মাটি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। লাঠিচার্জও করেছে। অবশ্য গুলি চালানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তৃণমূলের অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণ চলাকালীন উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে মৃত্যু হয় বিজেপির এক পোলিং এজেন্টের। শনিবার কামারহাটির ১০৭ নম্বর বুথে। মৃতের নাম অভিজিৎ সামন্ত। বিজেপির অভিযোগ, অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি ভোটকর্মীরা। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

এদিন ভোট গ্রহণ পর্ব শেষ হতেই কামারহাটির তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রের শরীর খারাপের কথা জানা যায়। জানা গেছে, এদিন বিকেলে রথতলা এলাকার একটি বুথে যাওয়ার পর তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। তাঁকে রথতলা এলাকার পার্টি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তড়িঘড়ি একজন চিকিৎসককে ডাকা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে দ্রুত তাঁকে অক্সিজেনও দেওয়া হয়। রাতে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, এই কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থী রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাইকে এসে তৃণমূল কর্মীরা তাঁকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে।
রাজুর দাবি, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে চেয়েছিল তৃণমূল। ঘটনার পিছনে তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রের উসকানি দায়ী বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া, এদিন নদিয়ার চাকদহে একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যেই এদিন বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে এক নির্দল প্রার্থীকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি ওই বন্দুক দেখিয়ে ভোটারদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁরাই জোট বেঁধে তাঁকে ঘিরে ফেলেন। পুলিশ ওই নির্দল প্রার্থীর আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে বলেও জানা গিয়েছে।

আবার, নদিয়ারই শান্তিপুরে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর। মৌচাক কলোনির ১৭৫ নম্বর বুথে দুপুর দেড়টা নাগাদ মোটরবাইকে করে এসে কয়েকজন বোমাবাজি করে এবং গুলিও চালায়। সন্তু মণ্ডল নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর হাতে গুলি লেগেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তৃণমূলের দাবি, সন্তু তাদের কর্মী। ঘটনার জন্য তারা বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার বিজেপি। তাদের বক্তব্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ওই তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

তবে এদিন হিংসা মারাত্মক আকার নিয়েছিল নদিয়ার গয়েশপুরে। এখানে বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়িতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বিজেপির ওই বুথ সভাপতির বাবাকেও মারধর করা হয়। ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। এই খবর প্রকাশ্যে আশার পরই সেখানকার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে এদিন রাতেও সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন রাখা হয়।

এ ছাড়া এই গয়েশপুরেই এক বিজেপি কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। জানা গিয়েছে, এখানকার ২৭০ নম্বর বুথে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ওই বিজেপি কর্মীর পায়ের কাছে একটি বোমা পড়ে। তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়েছিল কিনা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, বাপি দাস নামে তৃণমূল আশ্রিত এক দুষ্কৃতীই ওই বিজেপি কর্মীকে খুনের উদ্দেশ্যে বোমা ছুঁড়েছিল। ঘটনায় ওই বিজেপি কর্মী জখম হয়েছেন।
ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি কর্মী–সমর্থকেরা। প্রতিবাদে তাঁরা পথ অবরোধ করেন। দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার দাবি জানান। ঘটনার পর ওই বাপি দাসের বাড়িতেও চড়াও হন তাঁরা। যদিও পুলিশ শেষ পর্যন্ত তাঁদের আটকে দেন। গোঘাটেও এদিন দিনেদুপুরে গুলি চলে বলেও অভিযোগ উঠেছে। গোঘাটের ভাদুর অঞ্চলের পোড়াবাগান এলাকায় ওই ঘটনায় একজনের পায়ে গুলি লাগে। শনিবার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটেছে। জখম শুভময় কুণ্ডু বিজেপি কর্মী বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় বিজেপি শাসক দলকেই অভিযুক্ত করেছে। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মিনাখাঁয় এদিন সকালে রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান বিজেপির এজেন্ট। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ গেলে তারা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করে। পরে রিপোর্ট যাচাই করে কমিশন জানায়, বুথেই আছেন ওই এজেন্ট। এদিন বিধাননগরের নয়াপট্টিতে বিজেপি প্রার্থী সব্যসাচী দত্তকে ঘেরাও করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের তরফে পাল্টা অভিযোগ করা হয়, সব্যসাচী দত্ত নাকি ভোটারদের ভয় দেখিয়েছেন। তৃণমূল কর্মীরা ‘খেলা হবে’, ‘জয় বাংলা’, ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিলে ছুটে আসেন বিজেপি কর্মীরাও। পাল্টা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন তাঁরাও।
বুথের ১০০ মিটারের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটায় সব্যসাচী অভিযোগ করে জানান, এটাই নাকি প্রশাসনের আসল চেহারা। তৃণমূলের পায়ের তলার জমি সরে গিয়েছে। তাই তারা এ ভাবে হিংসার ঘটনা ঘটাতে চাইছে। বিধাননগরেরই শান্তিনগর ও চাউলপট্টিতে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণ আনে।

বিজেপির অভিযোগ, ভোটারদের বাধা দিয়ে বুথ লুঠের চেষ্টা করছিল তৃণমূল। তারা বাধা দিলে গোলমাল শুরু হয়। শান্তিনগরে একটি বুথ থেকে বিজেপি এজেন্টকে মারধর করে তৃণমূল তুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপিই তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। দুই শিবিরেরই কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন বলে খবর। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের টহলদারিতে শেষ পর্যন্ত ভোটগ্রহণ পর্ব সম্পূর্ণ হয়। অন্যদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বীরভূমের মুরারইয়ের তৃণমূল বিধায়ক আবদুল রহমানের। শনিবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এবার আবদুল রহমানকেই মুরারই থেকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তিনি করোনা সংক্রমিত হলে প্রার্থীতালিকা থেকে তাঁকে বাদ দেন দলনেত্রী মমতা। অভিযোগ, কংগ্রেস থেকে ভাঙিয়ে মোশারফ হোসেনকে প্রার্থী করে দেন তিনি।

ফলে এই পর্বে করোনায় তিন নেতার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার বিকেলে বহরমপুরের কোভিড হাসপাতালে মৃত্যু হয় জঙ্গিপুরের আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দীর। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয়েছিল সমশেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের। এই দুই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ দফার ভোট গ্রহণ হবে আগামী বৃহস্পতিবার।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..